Tanguar Haor - সুনামগঞ্জ । 5.46

4.7 star(s) from 384 votes
Tahirpur upazila
Sunamganj, 3030
Bangladesh
Add Review

About Tanguar Haor - সুনামগঞ্জ ।

Tanguar Haor -  সুনামগঞ্জ । Tanguar Haor - সুনামগঞ্জ । is one of the popular place listed under Landmark in Sunamganj , Tourist Attraction in Sunamganj , Lake in Sunamganj , Tourist Information in Sunamganj ,

Contact Details & Working Hours

Details

অদ্ভূত সুন্দর এক জলরাশি- টাঙ্গোয়ার হাওড়! শুরুতেই বলে রাখি টাঙ্গোয়ার হাওড়ে বর্ষায় গেলে এক ধরনের মজা আর শীতের দিনে গেলে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক মজা! আমি গেছি গত বর্ষায়! ঢাকা থেকে গাড়ী নিয়ে গিয়ে বিশেষ কোন সুবিধে হবেনা। তার চেয়ে বরং... বাসে করে সোজা চলে যাবেন সুনামগঞ্জ।

ভাটির দেশ সুনামগঞ্জ! সুনামগঞ্জ শহরের ঘাট থেকে ২ দিনের জন্য একটা ইঞ্জিন বোট ভাড়া করতে হবে। ভাড়া প্রতিদিনের জন্য কম-বেশী ৩০০০/- টাকা! ভাল দেখে নৌকা নেবেন। আশ-পাশের দৃশ্য দেখতে হলে ছই-এর উপর সারাদিন কাটাতে হবে। ছই-এর উপরটা টিন সীট দিয়ে মোড়ানো, সাইডে বসবার ব্যবস্থা আছে এমন নৌকা হলে ভাল। টাঙ্গোয়ার হাওড়ের প্রকৃত মজা নিতে হলে এই নৌকাতেই রাত্রি যাপন এবং প্রাকৃতিক ক্রিয়া-কর্ম সারতে হবে... এটা ধরে নিতে পারেন।

সুনামগঞ্জ থেকে সকাল সকাল নৌকা ছাড়া ভাল। সুরমা নদী দিয়ে যাত্রা শুরু হবে ... তারপর এই নদী সেই নদী, এই খাল সেই খাল পাড়ি দিয়ে আপনাদের নৌকা চলবে টাঙ্গোয়ার হাওড় অভিমুখে। পথে বিশ্বম্বরপুর এবং তাহিরপুর উপজেলা সদর পরবে। তাহিরপুর উপজেলা সদরে রাত্রে থাকার ব্যবস্থা করতে পারেবেন। তাহিরপুরে রাত্রি যাপন করলে টাঙ্গোয়ার হাওড় দেখে সন্ধ্যায় আবার ফিরে আসতে হবে তাহিরপুরে। তবে দরকার কি?! সঙ্গী কোন মহিলা অভিযাত্রী না থাকলে রাত্রি যাপনের জন্য আপনাদের নৌকা-তো আছেই! তাহিরপুরে এক কাপ চা খেয়ে সোজা চলে যান টাঙ্গোয়ার হাওড়! আর হ্যাঁ... ঢাকা থেকে শুনে যেতে পারেন...টাঙ্গোয়ার হাওড়ে একটা সরকারী রেস্ট হাউজ আছে! আসলে সেটা কোন রেস্ট হাউজই নয়। কনক্রিটের পিলারের উপর টিনের ঘর। টাঙ্গোয়ার হাওড়ের মাছ পাহারা দেবার জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ ও আনসাররা থাকে ওখানে। ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব নিজেও ওখানে কখনও থাকেন না। ওটা থাকার মত কোন জায়গা-ও না।

বর্ষার টাঙ্গোয়াঃ

বর্ষায় গেলে নৌকাই একমাত্র বাহন। উত্তর দিকে মেঘালয় রাজ্যের খাড়া পাহাড় আর তিন দিকে থৈ থৈ পানি! মাঠ-ঘাট সব পানি আর পানি! ভাটির দেশের প্রকৃত রূপ! সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা আর কিশোরগঞ্জ- এই তিন জেলা জুড়ে বিস্তৃত সেই অদ্ভূত জলরাশি। এই জলরাশির ভিতরেই মেঘালয়ের পাদদেশে টাঙ্গোয়ার হাওড়! বর্ষায় আলাদা করে টাঙ্গোয়ার হাওড় বলে কিছু থাকেনা... সব একাকার! টাঙ্গোয়ার হাওড়ে পৌছালেই দেখবেন গভীর কালচে পানি -- অনকে দূর পর্যন্ত কোন গাছ-গাছালীর উপরাংশ পানির উপরে দেখা যাচ্ছেনা! তখনই বুঝবেন আপনি যথাস্থানে পৌঁছে গেছেন।
এই পথে গেলে টাঙ্গোয়ার হাওড়ের সবচেয়ে নিকটবর্তী গ্রাম 'বাগলী'। খাতা কলমে নাম 'বীরেন্দ্রনগর'। ওখানে বিডিআর-এর একটা বিওপি রয়েছে। ছোট্ট একটা বাজার রয়েছে। ইলেকট্রিসিটি রয়েছে। বাগলী বিডিআর ঘাটে নৌকা ভিড়িয়ে এখানেই রাত্রী যাপন শ্রেয়ঃ! নিরাপত্তা সমস্যা এমনিতেও নেই, তারপরও আপনি নিশ্চিত হতে পারলেন!

বাগলী বাজারে চা-এর দোকান থাকলেও ভাতের হোটেল নেই! বাজার থেকে ঝুড়ি ধরে হরেক রকমের মিশানো তাজা ছোট মাছ কিনবেন... নৌকার মাঝিরা সাধারণত চমৎকার রান্না করে! লাল ঝুটিওয়ালা দেশী মোরগ-ও মিলবে প্রচুর! টাঙ্গোয়ার হাওড়ে বড় মাছও আছে, কিন্তু বর্ষায় প্রজনন মৌসুমে এই মাছ মারা নিষেধ। ও, বলতে ভুলেই গেছি... স্থানীয় সুগন্ধি 'বাঁশফুল' চালের ভাত খেতে ভুলবেন না!

আকাশ জুড়ে দেখবেন হরেক রকম মেঘ আর মেঘ। বর্ষায় শুধু সকালটা ছাড়া মোটামুটি সারাদিনই বৃষ্টি! সন্ধ্যায় বৃষ্টি একটু ধরে আসলেও মধ্যরাত থেকে আবারও ঝিরঝির বৃষ্টি! আর হ্যাঁ... সূর্য ডোবার আগ দিয়ে নৌকা নিয়ে চলে যাবেন টাঙ্গোয়ার হাওড়ের মাঝখানে.... সে এক অদ্ভূত ভাললাগা দৃশ্য! মনোরম, মোহনীয়!

বর্ষায় দেশী পাখি, যেমন....বক, দু'একটা পানকৌড়ী আর মাছরাঙা ছাড়া তেমন কোন পাখি চোখে পরবেনা। আম, জাম, কাঁঠাল এই জাতীয় পরিচিত গাছ খুব কমই দেখবেন। পরিচিতের মধ্যে তাল গাছটা পাবেন.... অর দেখবেন নাম না জানা নানা ধরনের গাছ গাছালী।

শীতের টাঙ্গোয়াঃ

শীতকালে আপনি সুনামগঞ্জ শহর থেকে প্রায় চল্লিশ কিঃমিঃ দূরে ইট বিছানো এবং কাঁচা রাস্তা ধরে টেকের ঘাট (টেকেরহাট নয়) পর্যন্ত মটর সাইকেলে যেতে পারবেন। তারপর সেই নৌকা আপনাকে নিতেই হবে। টেকের ঘাট দিয়ে ইন্ডিয়া থেকে কয়লা, পাথড় আমদানী হয়। সেখানে রাতে থাকার জায়গা পেতে পারেন। খাবার হোটেলও পাবেন। নৌকা নিয়ে সারাদিন টাঙ্গোয়ার হাওড় বেড়িয়ে আবার সন্ধ্যায় টেকেরঘাটে ফিরে আসতে পারেন। তবে সুনামগঞ্জ থেকে নৌকা ভাড়া নিতেই আমি সাজেষ্ট করবো। শীতে গেলে মূল টাঙ্গোয়ার হাওড় অংশটুকু ছাড়া চারিদিকে থৈ থৈ পানি পাবেন না। পাবেন সবুজ ধানক্ষেত... আর সেই ধানক্ষেতে বাতাসের দোল খেলা! নদী এবং খালে-বিলে পানি থাকবে, আর থাকবে শীতের অতিথি পাখি! অতিথি পাখিদের ছবি তোলার জন্য অনেক ফটোগ্রাফার এবং পাখি প্রেমিকরা এই সময় টাঙ্গোয়ার হাওড়ে বেড়াতে আসেন। আর শীতের দিনে আশা করি মাছও পাবেন প্রচুর! পাবেন আকাশ জুড়ে সাদা মেঘের ভেলা।


ঢাকায় ফেরাঃ

ফেরার পথে আবার সুনামগঞ্জ হয়ে না-ই বা ফিরলেন। টাঙ্গোয়ার হাওড় থেকে নৌকা যোগে চলে যাবেন নেত্রকোনার কলমাকান্দা বা মোহনগঞ্জ। নতুন একটা রুট ঘুরে আসা হবে। সেখান থেকে লোকাল বাসে নেত্রকানা, নেত্রকানা থেকে ডাইরেক্ট বাসে সোজা ঢাকা। সময়ও লাগবে কম। এখানে বলে রাখা ভাল.... 'কলমাকান্দা-নেত্রকোনা' সড়ক পথ আমার দেখা সবচেয়ে বাজে রাস্তা! তবে কলমাকান্দা থেকে নেত্রকানা যেতে সময় লাগবে মাত্র ঘন্টা দুয়েক! সুনামগঞ্জ থেকে নৌকা ভাড়া করবার সময় মাঝিকে এই রুটে ফেরার বিষয়টি আগেই মিটিয়ে নেবেন।

টিপসঃ

ক) আর্মি বা বিডিআর-এর কোন রেফারেন্স থাকলে বাগলী (বীরেন্দ্রনগর) বিডিআর বিওপি-তে আতিথেয়তা পেয়ে যেতে পারেন (যেমন আমরা পেয়েছিলাম)। তাহলে আর কোন চিন্তাই নাই! থাকার বিছানা-পত্র আর রান্নার ঝামেলা মিটেই গেল। তবে আপনাকে থাকতে হবে আপনাদের নৌকাতেই!

খ) টাঙ্গোয়ার হাওড় ও আশে পাশে গ্রামীণ ফোনের ভাল নেটওয়ার্ক পাবেন। অনেক দূরে গেলেও কাছের মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হবার ভয় নেই। শুধু বাগলী বাজারে চা খেতে খেতে মোবাইলটা চার্জ করে নিলেই হবে। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাবেন কতটুকু সময়ের জন্য..তা আগাম বলা মুশকিল।

গ) যাবার সময় সুনামগঞ্জ থেকে প্রয়োজনীয় টুকি-টাকি কিনে নেবেন। ধুমপানের অভ্যেস থাকলে অন্ততঃ দুইদিনের রসদ সাথে নিতে ভুলবেন না!

Map of Tanguar Haor - সুনামগঞ্জ ।

Updates from Tanguar Haor - সুনামগঞ্জ ।

Reviews of Tanguar Haor - সুনামগঞ্জ ।

   Loading comments-box...