* আমাদের কাহন *
মৃত্তিকায় আমাদের মা। আর মহাকালের পৌরশে আমরা প্লাবিত। সময়ের ধাবিত বীর্যে আমরা এসেছি। তাই আমরা “মৃত্তিকায় মহাকাল”।
আমরা আকাশ থেকে খসে পড়ি নি কিংবা মাটি ফুড়েও বেরোই নি। আমাদের জন্ম চিরায়ত ধারায়। কিন্তু যখন বোধ-বুদ্ধির সঙ্গে আমাদের মিলন ঘটে তখন থেকেই আমরা ব্যতিক্রম। স্রোত-শ্রোতীর বিশ্র“ত মহসাগরে আমাদের অবগাহন। মাটির গভীর থেকে উঠে আসা শিল্পের ঘ্রাণ, পাথর ফেটে গজে উঠা সাহিত্যের শেকড় আর হাজার বছরের বাঙালি ঐতিহ্যে লালিত সংস্কৃতির বটবৃক্ষের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেয়া আমরা ক’জন শিল্পের বিমূর্ত সন্যাসী।
আমাদের জন্ম বাধনের রঙে রঙিন। ফাগুনের টকটকে লাল পলাশের আভায় সিক্ত। রোধ ঝকঝকে আলোতে আমরা স্নান করেছি।
মৃত্তিকা থেকে জন্ম নিয়ে আমাদের গন্তব্য মহাকালের দিকে। কেউ যদি আমাদের কবি বলেন আমরা বলি আমরা নিজেরাইতো কাব্য। কুপমন্ডুকতার মুন্ডু ছিড়তেই আমাদের আগমন। প্রগতির সাথে শিল্প আর সাহিত্যের মৌল মিশিয়ে আমরা উদ্ভাবন করতে চাই বাঙালি সংস্কৃতির হাইব্রিড বীজ। প্রজন্মের ইস্পাত কঠিন দূরহ পথে আমরা ছুটে যেতে চাই অনন্ত অবিরাম। আমাদের কণ্ঠস্বর পৌঁছে দিতে চাই মহাবিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। অনুরণন তুলতে চাই বাংলা ও বাঙালির প্রতিটি হৃদয়ে।
আমরা স্বাত্তিক আবৃত্তি, সঙ্গীত ও অভিনয়ে বিশ্বাসী, মুক্ত শিল্প চর্চায় লীন হয়ে শুভ,শুদ্ধ ও সম্ভাবনাময় সংস্কৃতির পথে আমাদের নিরন্তর যাত্রা।
বিভাজন নয় বিশ্লেষনের সমুন্নত পথে আমরা খুঁজে ফিরি দেশ মা ও মাটির মঙ্গলের মহান আলো, আমরা নব আনন্দে জেগে উঠে দেখি এখনো আলোর পথে আলোগুলো আসলে আলো নয়, আলেয়ার বৃত্তাকার বলয়ে উঁকিঝুঁকি মারে অলস আঁধার।
তবে কি নিঃশেষ হয়ে যাবে জাগরনের সকল স্পৃহা?তবে কি স্তিমিতের স্তম্ভেই দাঁড়িয়ে থাকবে মৃত্তিকার মহৎ সব সম্ভাবনা?
তবে কি তাত্ত্বিকতার ঝাঁকরা চুলেই আটকে থাকবে তৃতীয় স্বত্তার নিজস্ব উদ্ভব,তার ভেতরে বিদ্যমান সকল সৃষ্টিশীলতা?
না!
আমরা বেঁচে আছি,বিভৎস ভাবনার বিনাশী বন্দনায় বিবাগী না হয়ে কোন এক বসন্তে আমরাও জেগে উঠে বলছি,নব আনন্দে জাগো হে মানুষ! নিঃশেষ নয়,দ্রোহ ও প্রেমে শেষ বলে কিছু নেই।শুভস্বত্তা অন্তিমের অনন্ত দাগ ডিঙিয়ে পেয়ে যাক ধ্রুব ও ধ্বনন্তরী জাগরনের মর্যাদা।
আমরা জেগেছি মৃত্তিকার বুক চীরে মহাকালের যাত্রায়
তথাকথিত প্রথার শৃঙ্খল ভেঙে আমরা জাগাতে চাই নবসৃষ্টির মহানন্দে। আমরা বেড়ে উঠতে চাই শিল্পের প্রাকিৃত প্রাঙ্গনে। আর তাইতো এই সংকীর্ণ ধরণীকে দ্রোহের মন্ত্রে জাগাতে আমাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হোক ...
“ কাব্যতীর্থ, দ্রোহেরগীত,
নাট্যযোগে ত্রিমাত্রিক
মঞ্চে তুফান বারংবার
চল গর্জে উঠি আরেকবার "