বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বিগত ২০১০সালের ১১নভেম্বর প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার জনগণের দোড়গোড়ায় তথ্য ও সেবা পৌছে দেয়ার অন্যতম মাধ্যম হিসাবে কাজ করে আসছে। দেশের প্রতিটি গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ তথ্য ও প্রযুক্তি সেবা থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তাই এই তথ্য ও প্রযুক্তির যুগে যাতে মানুষ তথ্য ও সেবা গুলো পেতে পারে, সে জন্য ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়। আজ মানুষ অনেক উন্নত সেবা পাচ্ছে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে।
ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন তথ্য, ইমেইল করা, সরকারি ফরম, স্কাইপির মাধ্যমে এ ইউনিয়নের সাধারন মানুষ সরাসরি জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হচ্ছে। যেমনটি করেছে হলোখানা ইউনিয়নের ভেরভেরী গ্রামের জামরন বিবি।অতি সহজেই মানুষ তার সমস্যার সমাধান পাচ্ছে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে।
গ্রামের মানুষের কৃষি সমস্যার জন্য জেলা সদর বা উপজেলা সদরে যেতে হয়, ডাক্তারি পরামর্শের জন্য অনেক মাইল দুরে যেতে হতো, মৎস্য সমস্যার জন্য অনেক কষ্ট করতে হতো ঠিক মতো তথ্য পাওয়া যেত না । কিন্তু; এখন ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার এর মাধ্যমে তা অতি সহজেই জানতে পারছে।
মানুষ এখন আর গ্রামের কোন প্রভাবশালী বা মোড়ল এর কাছে যায় না কোন তথ্য জানতে। গ্রামের মানুষ কেবল প্রতারিতই হতনা অনেক ভুল তথ্য পেত তাদের কাছ থেকে। এতে করে তাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হতো। কিন্তু; এখন অনায়াসে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে এসে সে সব তথ্য পাচ্ছে। কেননা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার গ্রামের মানুষের দ্বারে দ্বারে তথ্য ও প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগিয়ে দিয়েছে। আজ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার এর অনেক সুনাম অনেক মর্যাদা কেবল সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য।
সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে তথ্য ও প্রযুক্তি পৌছে দেয়ার সুবাধে মানুষ আজ কোন কাজের জন্য বিভ্রান্তিতে পড়ে না। একটি পাসপোর্ট ,একটি চিঠি, একটি ছবি পাঠাতে আর ডাকঘরে যায় না । ইমেইল এর মাধ্যমে কয়েক মিনিটেই পৌছাতে পারে তার নাতির ছবিটি তার ছেলের কাছে, পারে তার জুরুরী পাসপোর্ট এর কপিটা দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে, হলোখানা ইউনিয়নের লক্ষীকান্ত গ্রামের আজিজার রহমান তার ছেলে মালয়শিয়া প্রবাসী মিন্টু মিয়ার কাছে নাতির ছবি পাঠিয়েছেন। এ সময় আনন্দে তার চোখ জল এসেছিল।
আজ নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারী নির্যাতন, বাল্য বিবাহরোধ এর জন্য হলোখানা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার এর আয়ের অর্থ থেকে নাট্য দলের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে নাটক দেখানো হয়। এর ফলে সুভারকুটি গ্রামের আব্দুল বাতেনের মেয়ে বিলকিছ বাল্য বিবাহর হাত থেকে মুক্তি পায়।
হলোখানা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার হতে পর্চা খুব সহজে পেয়ে এ এলাকার জনগণ খুব খুশি । সুভারকুটি গ্রামের বিধবা মহিলা সাজেনা বেগম এবং নবীর উদ্দিন এই দুই ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ভিডিও চিত্র প্রচার করেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক এবিএম আজাদ।
বিদেশ গমনেচ্ছুদের রেজিষ্ট্রেশন কাজ দক্ষতার সাথে সম্পাদন করে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার । হেমেরকুটি গ্রামের আলিফ উদ্দিনের পুত্র মোঃ এরশাদুল হক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে এখন সে সাবলম্বী।
সন্ন্যাসী গ্রামের বেকার যুবক জেলালের মতো অনেক ছেলে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার হতে কম্পিউটার প্রশিক্ষন নিয়ে চাকুরী করে এখন তারা সংসার চালাচ্ছে।
এই ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ অনলাইনে পন্য ক্রয় ও বিক্রি করেতে পেরে খুব খুশি।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন তা বাস্তবায়নের অন্যতম হাতিয়ার হলো ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার । সরকারের এই চ্যালেঞ্জ অনেকটাই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার । এটা আমাদের একটা সফলতার উদাহারণ, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার আজ জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে মডেল হিসাবে কাজ করছে।