Gopalganj 5.02

4.5 star(s) from 64 votes
Gopalganj, 8100
Bangladesh

About Gopalganj

Gopalganj Gopalganj is one of the popular place listed under City in Gopalganj , Public Places in Gopalganj ,

Contact Details & Working Hours

Details

Gopalganj district is one of the districts within the Dhaka division of Bangladesh. Gopalganj District was established in 1984. Before that it was a subdivision of Faridpur District.The district is subdivided into five subdistricts (upazila), 4 municipalities, 36 wards, 68 union parishads, 618 mouzas, 880 villages and 85 mahallas. The Subdivisions are-

• Gopalganj Sadar Upazila
• Kashiani Upazila
• Kotalipara Upazila
• Muksudpur Upazila
• Tungipara Upazila

Area: 1,490 km².

Population: 1132046. Among them male are 50.05%, female 49.95%.

Religion: Muslim 63.61%, Hindu 35.13%, Christian 1.20%, Buddhist 0.02% and others 0.04%.

Literacy rate: Average literacy rate is 38.2%. Among them male are 44.7% and female 31.6%.

Boundary: This district is bounded by FARIDPUR district on the north, PIROJPUR and BAGERHAT districts on the south, MADARIPUR and BARISAL districts on the east and NARAIL district on the west.

Weather: Average maximum temperature is 35.8°C, minimum 12.6°C. Total rainfall is 2105 mm.

Major rivers: Garai, Madhumati, Kaliganga, Hunda, Ghagar, and old Kumar etc.

Notable depressions: Borni Baor, Chandar Beel and Baghyar Beel.

Main crops: Paddy, jute, sugarcane, ground nut etc.

Main fruits: Mango, black berry, palm, banana etc.

Mineral resource: Pit coal.

Main exports: Jute, ground nut, molasses, sugarcane.

Mills and factories: Main mills and factories are Textile mill, ice factory, biscuit factory, saw mill, rice mill, oil mill, flour mill etc.

Main occupations: Agriculture 46.37% and agricultural labourer 20.94%.

Transportation system: Main transportation process of this district is by road. Beside this railway and waterway are also used.

Marks of the War of Liberation: There are 1 Mass killing site, 2 memorial monument and 2 Mass graves in this district.

Educational institutions: Major educational institutions of this district are 1 University College, 1 liberation war research institute, 1 vocational institute and 1 homeopath college. 1 Medical College, 1 Science and Technology University. Beside these there are also 5 Government College, 16 non-government colleges and a lot of high school, Junior School and Primary Schools.

Specialty of Gopalganj district: Great leader Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, the first President of Bangladesh, hailed from this district (village of Tungipara).Sheikh family is very dominating in Bangladeshi politics. Sheikh Mujib’s daughter Sheikh Hasina Wajed is the Prime Minister of Bangladesh. Many other members of Sheikh Family are members of Bangladeshi parliament.

Places of interest:
• Ulpur Zamindar palace. Currently used a Tehsil Office.
• Home of Basu Roy Chowdhury family.
• Zamindar palace of zaminder Munshi Abdur Razzak Chowdhury (Arpara).
• Majar of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman and other members of his family.
• Home of Sheikh family.

Historical events:
• A battle between Mughal emperor Babur and sultan of Bengal Nusrat Shah was held on the bank of the Ghargara (presently the Ghagar) of this district.
• FAKIR-SANNYASI RESISTANCE was held at the early part of the British rule in this district.

Gopalganj Town: Gopalganj Town is a municipal town which consists of 9 wards and 49 mahallas. The municipal was established in 1972. The area of the town is 8.59 sq km with a population of 40987. Among them male are 53.27%, female 46.73%. The density of population is 4771 per sq km and Literacy rate is 66.9%.

*গোপালগঞ্জ জেলা*:-

দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের ক্ষেত, হাওড়-বাওড় ও নদ-নদী বিধৌত বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জলাভূমি বেষ্টিত এক ভূখণ্ডের নাম গোপালগঞ্জ। মধুমতি, চন্দনা-বারাশিয়া, স্বচ্ছ সলিলা কুমার নদের শাখা-প্রশাখা এ জেলায় বিছিয়ে রয়েছে জালের মত। প্রাচীন কাল থেকেই এ সব নদী, শাখা নদী ও উপ-নদীগুলোর তীরে তীরে গড়ে উঠেছে গ্রাম, হাট-বাজার, গঞ্জসহ বহুজনপদ। মধুমতি নদীর তীরে গড়ে ওঠা এরকম একটি গঞ্জের নাম ছিল রাজগঞ্জ। আর এ রাজগঞ্জই হলো গোপালগঞ্জের পূর্ব নাম।

গোপালগঞ্জ বলে যে শহরটিকে আমরা চিনি তার আদি নাম ছিল খাটরা। এ শহরটি খাটরা মৌজায় অবস্থিত। এখানে গোপালগঞ্জ নামে ভিন্ন কোন স্থান গ্রাম বা মৌজা নেই। এ অঞ্চলটি অতীতে ছিল জঙ্গলাকীর্ণ ও বিপদসংকুল। সম্ভব সুলতানি আমলে পশ্চিমা সৈন্য সামন্তদের উত্তরাঞ্চলে যেতে হলে এ পথেই যেতে হতো। এ অঞ্চলটি বিপদসংকুল হওয়ার কারণে ফার্সি ভাষায় ওইসব সৈন্য সামন্ত খত্রা নামে অভিহিত করে এ এলাকাকে। তাদের উচ্চারিত খত্রা শব্দের অপভ্রংশই খাটরা হয়ে বৃটিশ আমলে সিএস জরিপে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে।

নামকরণ:- আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, গোপালগঞ্জের পূর্ব নাম ছিল রাজগঞ্জ। মকিমপুর স্টেটের জমিদার রানী রাসমনীর জমিদারি এলাকা খাটরা মৌজায়। আর এই খাটরা মৌজায় ছিল রাজগঞ্জ। ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের সময় একজন উচ্চপদস্থ ব্রিটিশ কর্মকর্তাকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন জেলে সম্প্রদায়ের মেয়ে রাসমনি। এ মহৎ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি লাভ করেছিলেন মকিমপুর পরগনার জমিদারি। খাটরা মৌজা ছিল মকিমপুর পরগনার আওতাধীন একটি এস্টেট। রানী রাসমনী বাস করতেন কলকাতার করনেশন স্টেটে। তার হয়ে নায়েব রজনী ঘোষ আজকের গোপালগঞ্জ (তত্কালীন রাজগঞ্জ) এলাকার জমিদারি তদারকি করতেন। রানী রাসমনীর স্নেহ ভাজন নায়েব রজনী ঘোষের এক আদুরে নাতির নাম ছিল নবগোপাল। রানী প্রজাদের ইচ্ছায় নবগোপালের নামের অংশ গোপাল-এর সাথে পূর্বেকার রাজগঞ্জের নামের গঞ্জ যুক্ত করে গোপালগঞ্জ নামের প্রবর্তন করেন।

সুলতানি আমল ও মোগল আমলে জেলা ফতেহবাদের অন্তর্ভুক্ত ছিল এ অঞ্চল। পরে গোপালগঞ্জ ফতেহবাদের থানা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশিষ্ট খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারক সেন্ট মথুরনাথ বসুর প্রচেষ্টায় গোপালগঞ্জকে মহকুমায় উন্নীত করা হয়। সেন্ট মথুরনাথ বসুই প্রথমে গোপালগঞ্জে কোর্ট এবং স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত মথুরনাথ ইনষ্টিটিউশনের (মিশনারী হাই স্কুল) ছাত্র ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

জেলা সৃষ্টির ইতিহাস:- ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দে গোপালগঞ্জ থানা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন এ থানাটি মাদারীপুর মহকুমার আওতাভুক্ত ছিল। আর মাদারীপুর ছিল বাকেরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত। ১৮৭৩ সালে মাদারীপুর মহকুমাকে বাকেরগঞ্জ জেলা থেকে কেটে এনে ফরিদপুর জেলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ১৯০১ সালে গোপালগঞ্জকে মহকুমা হিসাবে উন্নীত করা হয়। সে সময় শহরের লোকসংখ্যা ছিল মাত্র ৩৪৭৮ জন। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের পরে গোপালগঞ্জ থানার ৩টি এবং কোটালীপাড়া থানার ২টি ইউনিয়ন নিয়ে টুংগীপাড়া থানা হিসাবে একটি নতুন থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়মী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জন্মস্থান। ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ জেলা হিসাবে মর্যাদা লাভ করে। এর আগে এটি ছিল ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত একটি মহকুমা। বর্তমানে এ জেলায় উপজেলার সংখ্যা ৫ টি। টুংগীপাড়া, কোটলীপাড়া, মুকসুদপুর, কাশিয়ানী ও গোপালগঞ্জ সদর। পৌরসভা ৪ টি, ইউনিয়ন পরিষদ ৬৯টি, গ্রাম ৮৮০টি।

ভৌগলিক অবস্থান ও সীমানা:- বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাংশে মধুমতি নদী বিধৌত একটি জেলা। ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত ১৭টি জেলার একটির নাম গোপালগঞ্জ। এই জেলা ২৩০৩৬ উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৯০৫১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। বর্তমানে সমুদ্রপৃষ্ট থেকে এর গড় উচ্চতা ৪৬ ফুট। এ জেলার পূর্বে মাদারীপুর ও বরিশাল জেলা, দক্ষিণে পিরোজপুর, বাগেরহাট ও খুলনা জেলা, পশ্চিমে নড়াইল ও মাগুরা জেলা এবং উত্তরে ফরিদপুর জেলা অবস্থিত। এ জেলার পূর্ব সীমানার খাটরা গ্রামের অধিবাসী হিন্দু ধর্মালম্বীরাই এ অঞ্চলে প্রথমে বসতি স্থাপন করে। ধারণা করা হয়, এটি বল্লাল সেনের আমলের (১১০৯-১১৭৯ খ্রিষ্টাব্দ) ঘটনা। এর আয়তন ১৪৮৯ বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। নারী-পুরুষের অনুপাত প্রায় সমান সমান। মুসলমান ৬৩.৬২%, হিন্দু ৩৫.১৩%, খ্রিষ্টান ১.২০% এবং অন্যান্য ০.০২%। শিক্ষার গড় হার ৩৮.০৭%। জনগোষ্ঠীর প্রধান পেশা কৃষি। প্রধান ফসল ধান, পাট, আঁখ ও বাদাম। বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদির মধ্যে রয়েছে চিনা, কাউন, আউশ ধান। জেলার প্রধান রপ্তানি ফসল পাট ও তরমুজ। প্রাচীন নির্দেশনাদির মধ্যে আছে চন্দ্রভর্মা ফোর্ট (কোটাল দূর্গ), বহলতলী মসজিদ (১৫৪৩ খ্রিস্টাব্দ), সেন্ট মথুরনাথ এজি চার্চ, শ্রীধাম ওড়াকান্দির শ্রী হরিমন্দির, ননী ক্ষীরের নবরত্ন মন্দির, কোর্ট মসজিদ, কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি, দীঘলিয়া দক্ষিণা কালীবাড়ি ইত্যাদি।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলী:- এ অঞ্চলের ঘর্ঘরা (বর্তমান ঘাঘর) নদীর তীরে মোগল সম্রাট বাবরের সঙ্গে বাংলার সুলতান নুশরত শাহর যুদ্ধ হয়। ব্রিটিশ আমলের গোড়ার দিকে এ অঞ্চলের সন্ন্যাসি ও ফকির বিদ্রোহ সংগঠিত হয়। ৬৯ সালে গণঅভ্যুথানের সময় শহীদ হন জলিলপাড় স্কুলের ছাত্র মহানন্দ বিশ্বাস।

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবরের সংগে আলাউদ্দিন হোসেন শাহর পুত্র নাসির উদ্দিন নসরত্ শাহর যুদ্ধ হয় এ অঞ্চলের ঘর্ঘরা নদীর তীরে। ঘর্ঘরা নদীই বর্তমানে কোটালীপাড়ার পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘাঘর নদী। নসরত্ শাহর আমলে দক্ষিণাঞ্চলে পর্তুগিজদের আক্রমণ ও লুটতরাজ বৃদ্ধি পেলে গোপালগঞ্জের সাধারণ লোকজন নিয়ে তিনি তা মোকাবেলা করেন।

ব্রিটিশ আমলের শুরুতেই এ অঞ্চলে সন্ন্যাসি বিদ্রোহ ও ফকির বিদ্রোহ দানা বেঁধে ওঠে। কোটালীপাড়া ও গোপালগঞ্জ সন্ন্যাসি ও ফকিরদের বেশ কিছু আখড়া ছিল। এ জেলার সবচেয়ে ঐতিহাসিক আন্দোলন হলো ফরায়েজি আন্দোলন। এখানে নীল চাষ বিরোধী আন্দোলনও হয়েছে। ১৮৪৬ সালে দুদু মিয়ার অনুচর কাদের বক্সের নেতৃত্বে পাঁচ চরে আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগ হয়। নীল কুঠির কর্নধার ডানলপ পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে কোটালীপাড়ার বান্ধাবাড়ী গ্রামের ধীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস শহীদ হন। তিনি এ জেলার প্রথম শহীদ। ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনের সময় শহীদ হন জলিলপাড় গ্রামের মহানন্দ বিশ্বাস।

প্রাচীন নিদর্শনাদি, প্রত্নসম্পদ ও জেলার ঐতিহ্য:- গোপালগঞ্জ হচ্ছে একটি ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী জনপদ। এখানে রয়েছে নানাবিধ দর্শনীয় স্থান ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনাবলী। কালের গর্ভে অনেক নিদর্শনাবলী হারিয়ে গেলেও এখানে বিভিন্ন প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, মঠ এ জনপদের গুরুত্বকে প্রাণবন্ত করে রেখেছে। পুর্ণব্রহ্ম শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর (ওড়াকান্দি, কাশিয়ানী), উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ ইসলামিক চিন্তাবিদ সদর শাহ শামচুল হক ফরিদপুরী (গওহরডাংগা, টুংগীপাড়া) ঐতিহাসিক ও হিষ্ট্রি অব বেঙ্গল গ্রন্থের রচয়িতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিসি ড. রমেশ চন্দ্র মজুমদার (খান্দারপাড়, মুকসুদপুর) কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (ইনশিয়া, কোটালীপাড়া), নির্মল সেন প্রমুখ বরেণ্য ব্যক্তির বাড়ি, জন্মস্থান ও পৈত্রিক নিবাস এ জেলায়। চন্দ্র ভর্মা ফোর্ট (কোটাল দূর্গ) কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের পৈত্রিক বাড়ি, কবি কৃষ্ণনাথ সার্বভৌমর (ললিত লবঙ্গলতা কাব্যগ্রন্থ প্রণেতা) বাড়ি, হরিণাহাটির জমিদার বাড়ি, দিঘলীয়া দক্ষিণা কালী বাড়ি, বহলতলী মসজিদ (১৫৪৩ সালে প্রতিষ্ঠিত) উলপুর জমিদার বাড়ি, সেন্ট মথুরনাথের সমাধি, সেন্ট মথুরনাথ এচি চার্চ, কোর্ট মসজিদ, ধর্মরায়ের বাড়ি, উজানীর জমিদার বাড়ি, শ্রীধাম ওড়াকান্দি, ননী ক্ষীর নবরত্ন মঠ, ঐতিহাসিক রমেশ চন্দ্র মজুমদারের পৈত্রিক বাড়ি, আদালত ভবন, পুরাতন হাসপাতাল ভবন ইত্যাদি। চতুর্থ শতাব্দীতে স্থাপিত কোটালীপাড়া চন্দ্রভর্মা ফোর্টটি পূর্ববঙ্গের সবচেয়ে বড় দূর্গ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া রাজা স্কন্ধ গুপ্তের (৪৫৫-৪৬৭ খ্রিষ্টাব্দে) স্বর্ণমুদ্রা, রাজা সমাচার দেব, ধর্মাদিত্য ও গোপচন্দের আমলের তাম্রলিপি এ জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ। এছাড়া টুংগীপাড়ায় জাতির পিতার সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স একটি দর্শনীয় স্থান।

কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনের বিবরণ উপস্থাপন করা হলো :

টুঙ্গীপাড়ার ঐতিহাসিক নিদর্শন: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় অবস্থিত। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কিছুসংখ্যকবিপথগামী সেনা অফিসারের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত বঙ্গবন্ধুকে এখানে সমাধিস্থ করা হয়। সমাধি সৌধটিকে বর্তমানে একটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপনায় পরিণত করা হয়েছে।

মুকসুদপুরের ঐতিহাসিক নিদর্শন: ঐতিহাসিক নিদর্শনে মুকসুদপুর সমৃদ্ধ। স্থাপত্য শিল্পে আভিজাত্যের স্বাক্ষর বহন করে আসছে বাটিকামারীর রায় বাড়ী, বনগ্রাম ভুঁইয়া বাড়ী ও নারায়ণপুরের মুন্সী বাড়ীর বহু কক্ষ বিশিষ্ট দ্বিতলা ইমারত সমূহ। মার্বেল ও মোজাইক পাথরের ব্যবহার ও নির্মাণ শৈলিতে যা আজও কালের সাক্ষী। এখানকার মন্দির সমূহের বিশেষ কারুকাজ আজও বিস্ময়ের বিষয়। গোহালার বাজার সংলগ্ন ভবন সমূহ, মোচনা, উজানীর জমিদার বাড়ি, চাওচার দত্ত বাড়ি, চ্যাটার্জি ও মুখার্জি বাড়ি, মহারাজপুরের দত্ত বাড়িসহ শতাধিক ভবন স্থাপত্যের নিদর্শন। খানপুরা চৌধুরী বাড়ির মসজিদ, বালিয়াকান্দী মসজিদও স্থাপত্যের বিশেষ নিদর্শন বহন করে।

গোপালগঞ্জ সদরের ঐতিহাসিক নিদর্শন:

থানা পাড়া জামে মসজিদ -গোপালগঞ্জ শহরের প্রথম মসজিদ হলো থানাপাড়া মসজিদ। ১৯২০ থেকে ১৯২১ সালের মধ্যে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। খেলাফত আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন ও পাকিস্তান আন্দোলনের সময় থানাপাড়া মসজিদ ছিল এ এলাকায় মুসলমানদের মিলন কেন্দ্র।

খাগাইল গায়েবী মসজিদ -গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার হরিদাসপুর ইউনিয়নের খাগাইল গ্রামে একটি পুরাতন পাকা মসজিদ রয়েছে। মসজিদটির নির্মাণের সন তারিখ জানা যায় না, তবে স্থানীয় লোকজনি এটিকে 'গায়েবী মসজিদ' বলে অবহিত করে থাকেন। মসজিদটির নির্মাণ শৈলি দেখে অনুমান করা যায় এটি আনুমানিক ১৫০ বছর পূর্বে নির্মাণ করা হয়েছে।

কোর্ট মসজিদ -কোর্ট মসজিদ গোপালগঞ্জ জেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত জেলার কেন্দ্রীয় মসজিদ কোর্ট মসজিদ। ১৯৪৯ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের গভর্ণর জেনারেল খাজা নাজিমুদ্দিন মসজিদটির শুভ উদ্ধোধন করেন এবং পরবর্তীতে স্থানীয় মহকুমা প্রশাসক কাজী গোলাম আহাদের বদান্যতায় তা নির্মিত হয়। মসজিদটিতে সুদৃশ্য উচ্চ মিনারসহ বৃহদাকার প্রবেশ গেট এবং একটি সুদৃশ্য বড় গম্বুজ ও দুটি ছোট গম্বুজ রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী মসজিদটির নির্মাণ শৈলি দৃষ্টিনন্দন।

সেন্ট মথুরানাথ এজি চার্চ -গোপালগঞ্জ জেলা সদরে থানাপাড়ায় ১৮৭৫ সালে খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য সেন্ট মথুরানাথ এজি চার্চ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা মথুরা নাথ বোস। জেলা সদরের থানাপাড়ায় প্রাচীন স্থাপত্যের মধ্যে এটি অন্যতম।

সর্বজনীন কালিমন্দির -সদর উপজেলাধীন খাটরা মৌজায় বর্ণিত মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরটি ইংরেজি ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর কালিপূজা, দুর্গাপূজা ও নামযজ্ঞের সময় এখানে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে। এছাড়াও বর্ণিত পূজা পার্বণ উপলক্ষ্ মাসিক, পাক্ষিক ও দিন ব্যাপী মেলা বসে। কালিপূজা মেলায় যাত্রা, সার্কাস, পুতুল নাচ, নাগরদোলা প্রদর্শিত হয়।

নয়নাভিরাম বিলরুট ক্যানেল -বৃটিশ আমলে ভেড়ার বাজার ছিল এ এলাকার ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র। মধুমতির মানিকদাহ বন্দরের নিকট থেকে উত্তর এবং উত্তর পূর্ব দিকে উরফি, ভেড়ারহাট, উলপুর, বৌলতলী, সাতপাড়, টেকেরহাট হয়ে আড়িয়াল খাঁর শাখা নদী উতরাইল বন্দরের কাছাকাছি পর্যন্ত ৬০/৬৫ কিলোমিটার র্দীঘ ক্যানেল খনন করা হয়। ক্যানেলটি ৪০০ ফুট প্রশস্ত, গভীরতা ৩০ ফুট। ক্যানেলটি ১৮৯৯-১৯০৫ সালে নির্মিত হয়। এ ক্যানেলটি খননের ফলে নদী পথে ঢাকা-খুলনার দুরত্ব ১৫০ মাইল কমে যায় এবং বঙ্গোপসাগর হয়ে আসা পন্য সহজেই কলকাতা বন্দরে পাঠানো সহজ হয়। এটি বঙ্গের সুয়েজখাল নামে পরিচিত। তৎকালীন সময়ে ক্যানেলটির নির্মান ব্যয় হয় ৩৩,৬৬,৮৭৯/- টাকা।

আড়পাড়া মুন্সিবাড়ী -ভেড়ারহাটের অপর পাড়ে আড়পাড়া গ্রামে প্রকৌশলী মুন্সি ইকরামুজ্জামান সৃজন করেছেন একটি মনোরম উদ্যান। ঘাট বাঁধানো দীঘির পাড়ে আধুনিক স্থাপত্য শৈলির দালান কোঠা, পাকা রাস্তা, দীঘির অপর পাশে নয়নাভিরাম বৃক্ষরাজি, ক্যাকটাস এবং দেশী-বিদেশী সুন্দর সুন্দর ফুলের গাছ। পাশেই শতাব্দী প্রাচীন মসজিদের মিনার। বাগানের পাশ ঘেষে রয়ে চলেছে সুন্দর বিলরুট ক্যানেল। সম্প্রতি বাগানের অদুরে এ নদীর উপরে নির্মিত হয়েছে হরিদাসপুর সেতু যা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। পেয়েছে পিকনিক ও পর্যটন স্পটের মর্যাদা ।

শুকদেবের আশ্রম -সদর উপজেলাধীন তেঘরিয়া মৌজায় বৈরাগীর খালপাড় ছুঁয়ে শুকদেবের আশ্রমটি অবস্থিত। আশ্রমটি আনুমানিক ১৮০২ সালে চন্দ্রগোঁসাই নামে এক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠা করেন। মূল উদ্দেশ্য অনাথদের আশ্রয়সহ সেবা প্রদান। পরবর্তীতে শুকদেব আশ্রমের দায়িত্বভার বহন করেন এবং সংসার ত্যাগী শুকদেব ঠাকুর ভগবানের কৃপায় আরাধনার মাধ্যমে অনেক বধির, বিকলাঙ্গ, বিভিন্ন ধরনের অসুস্থ মানুষের আরোগ্য লাভে সক্ষম হয়। বর্তমানে উক্ত আশ্রমে ডাঃ মিহির ঠাকুর এর তত্বাবধানে একটি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসালয় চালু আছে। নয়নাভিরাম গাছ-গাছালি আর পাখ-পাখালির ছায়াঘেরা পরিবেশ অনেক হিন্দু ভক্তকে আকৃষ্ট করে। এছাড়াও দীর্ঘদিনের জটিল ব্যাধির চিকিৎসার জন্য সকল ধরণেরমানুষ ছুটে যায় শুকদেব এর আশ্রমে।

খানার পাড় দীঘি -গোপালগঞ্জ সদর উপজেলাধীন কাঠি বাজারের কাছাকাছি ঐতিহাসিক খানারপাড় দীঘি। ৩০/৩৫ একর জমিতে বর্গাকারের বিশাল ও প্রাচীন এ দীঘিকে ঘিরে প্রচলিত রয়েছে লোমহর্ষক কিচ্ছা-কাহিনী, লোককথা-উপকথা। এলাকায় বসবাসকারী প্রবীণদের নিকট থেকে জানা যায় আগেকার দিনে অমাবস্যা-পূর্ণিমা ছাড়াও তিথি নক্ষত্রের বিশেষ বিশেষ দিনে সোনার নাও পবনে বৈঠা, বিভিন্ন বাজনাসহ অনেক রাত্রে দীঘি প্রদক্ষিণ করত এবং ঘাটলায় গিয়ে সামাজিক আনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করার জন্য তৈজসপত্রের প্রার্থনা করা হত। এখন সেখানে পূর্বের মত প্রার্থনা করা হয় না তবে এলাকায় প্রবীণদের কাছে বিষয়টি আজও বিস্ময়কর উপকথা।

উলপুর জমিদার বাড়ী -উলপুর জমিদার বাড়ী গোপালগঞ্জ সদর থেকে প্রায় ৮কিঃমিঃ উত্তরে অবস্থিত উলপুর গ্রাম। জানা যায় উলপুরের জমিদারেরা ছিলেন একশত ঘর শরীক। গ্রামটিতে এখনো টিকে আছে শতাব্দী প্রাচীন বেশ কয়েকটি বৃহদাকার দালান কোঠা। এর মধ্যে ৭/৮টি রয়েছে দোতালা দালান । জমিদারী প্রথা কালের গর্ভে হারিয়ে গেলেও জমিদারদের পরিত্যাক্ত বিল্ডিং গুলো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে স্বগর্বে। পুরাতন বিল্ডিংগুলো উলপুর তহশীল অফিস, পুরনো ইউনিয়ন বোর্ড অফিসসহ স্বাস্থ্য কেন্দ্র, সাব পোষ্ট অফিস, পুরানো সরকারী শিশু সদন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

৭১ এর বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ (স্মৃতিস্তম্ভ) -মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সংলগ্ন ৭১ এর বধ্যভূমি (জয়বাংলা পুকর) হচ্ছে এলাকাবাসীর স্মৃতি বিধুর স্থান। শত শত মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী বাঙ্গালীর আত্মাহুতির নীরব সাক্ষী এ বধ্যভুমি। এখানে বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সমর্থকদের ধরে এনে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হতো। পাকবাহিনী কর্তৃক জয়বাংলা পুকুর নাম করণ করে সেখানে মৃত দেহ টেনে হেঁচড়ে ফেলা হতো আর জয় উল্লাস করা হতো। ১৯৭২ সালে বাঙালী জাতির প্রথম বিজয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয় যা পরবর্তীতে দুস্কৃতকারীরা ধ্বংস করে ফেলে। অতপর আলহাজ্ব সাইদুর রহমান (চানমিয়া) দীর্ঘ দিন চেষ্টার পরে তৎকালীন মাননীয় জেলা প্রশাসক জনাব সাজ ম আকরামুজ্জামান এবং সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম ১৯৯০ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেন।

গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসা -টুংগীপাড়া উপজেলার গওহরগাঙ্গা গ্রামে মুসলীম বীর ইখতিয়ার উদ্দীন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজীর বঙ্গ বিজয়ী তেজতীপ্ত সতের সৈনিকের এক সৈনিকেরই উত্তরসুরী মরহুম পিতা মুন্সি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এবং মরহুমা মাতা আমেনা খাতুনের আঙ্গিনায় ফুটে ওঠে ইসলাম সাধক রূপী সুগন্ধি এক সাদা স্বগীয় গোলাপ-দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার উজ্জ্বলতম সূর্য, এ জামানার হাদী, যুগ সংস্কারক, রেনেসাঁ অন্দোলনের অগ্রদূত মুজাহিদে আযম, আলেমে রববানী, আল্লামা হযরত মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী (রাঃ) ওরফে ছদর সাহেব (১৮৯৮-১৯৬৯) । এ মহান স্বর্গীয় সাধকের ছোঁয়ায় টুংগীপাড়া আজ এক অন্যতম ধর্মীয় তীর্থ ভূমি। তাঁর হাতে গড়া গওহরগাঙ্গা জামেয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম মাদ্রসা আজ লাখো মুসল্লির আনাগোনায় মুখরিত। এই মাদ্রাসায় আয়োজিত বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল শুধু ধর্মীয় অনুষঙ্গই নয় বরং সামাজিক ভাবেও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে। কারণ এ সভা বা মাহফিলকে কেন্দ্র করে অত্র এলাকায় যেন একটা ঈদের আমেজ বিরাজ করে। দূর দুরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের মেহমানদারীতে মেতে ওঠে নিকটবর্তী এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। এই মহান ব্যক্তির হাতে গড়ে ওঠা হাজার হাজার মসজিদ-মাদ্রাসা (আসরাফুল উলুম মাদ্রাসা, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম সহ) ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত টুংগীপাড়ার ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধারন করেছে।

জগদান্দ মহাশয়ের তীর্থভূমি -হিন্দু ধর্ম সম্প্রদায়ের দিক থেকে টুংগীপাড়ায় রয়েছে গর্ব করার মত ব্যক্তিত্ব বিশেষত বাঁশুড়িয়া গ্রামের প্রয়াত জগদান্দ মহাশয়ের কথা সর্বজন বিদিত। তাঁর সামাজিক ও মানবিক দায়বদ্ধতা আজও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। আজও তাঁর তীর্থ ভূমি কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে হিন্দু মুসলিমের মিলন মেলা। যে মেলা টুংগীপাড়া বাসীর ইতিহাস- ঐতিহ্যের এক উজ্জলতম ধারক ও বাহক।

ওরাকান্দি -শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর ধর্মীয় ও সামাজিক কাজকর্ম পরিচালনার জন্য এবং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে বাংলা ১৩৩৯ সালের ২৪শে আশ্বিন, ১৯৩২ইং শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মিশন নামে একটি সংঘঠন গড়ে তোলেন । সমগ্র মতুয়া সমাজকে একই ধর্মীয় পতাকাতলে একত্রিত করে দশ ও জাতির বহুমূখী উন্নয়ন করাই ছিল এই সংঘঠনের প্রধান উদ্দেশ্য । মিশনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল শ্রীধাম ওড়াকান্দি । ঠাকুরের জীবদ্দশায় মিশনের মাধ্যমে বহূ উন্নয়ন মুলক কাজ করাহয় । শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ-এর কনিষ্ঠ পুত্র শ্রী সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর উক্ত মিশনের পরিচালনায় -নমঃশুদ্র সুহ্রদ- নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন । মিশনের উদ্যোগেই ঠাকুর বাড়ীর পাশে দেবী শান্তি সত্যভামা বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । তখন মিশনের সভাপতি ছিলেন শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ-এর পৌত্র শ্রীপতিপ্রসন্ন ঠাকুর । এখানে উল্লেখ্য যে, ঠাকুরের তিরোধানের পর মিশনের কর্মকান্ড স্তিমিত হয়ে পরে । পরবর্তীকালে সেই মিশন শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া মিশন নামে নব উদ্যোগে কর্মকান্ড পরিচালনা করছে । বাংলাদেশ সহ বহীর্বিশ্বে মতুয়াবাদ প্রচারের ও প্রসারের জন্য এবং জনহিতকর কাজে প্রায় শতাধিক শাখা কাজ করে চলছে । মতুয়া দর্পন নাম একটি ধর্মীয় পত্রিকা প্রচারিত হচ্ছে মিশনের পরিচালনায় । তাছাড়া রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বহুস্থানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মতুয়া সম্মেলন ।গুরুচাঁদ প্রতিষ্ঠিত সেই হরি-গুরচাঁদ মিশনের পূনঃজাগরনের বাস্তব রূপ দিয়েছেন তারই সুযোগ্য উত্তরসূরী শ্রী পদ্মনাভ ঠাকুর।

বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব:- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ঐতিহাসিক রমেশ চন্দ্র মজুমদার, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য, শেখ ফজলুল হক মনি, খোন্দকার সামসুদ্দিন আহমেদ, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী অহিদুজ্জামান, ক্যাপ্টেন ডা. ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ, নজির আহম্মেদ তালুকদার, সাবেক মন্ত্রী মোল্লা জালাল উদ্দিন আহম্মেদ, মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন, কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, এ্যাডভোকেট আলহাজ্ব কাজী আবদুর রশীদ, শেখ কবির হোসেন, অর্থনীতিবিদ বিশিষ্ট ব্যাংকার খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, সাবেক সিইসি এম. এ সাঈদ, সাবেক সচিব সৈয়দ আহম্মেদ বেগ, শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুর, সদর শাহ হুজুর, শামচুল হক ফরিদপুরী (ইসলামিক চিন্তাবিদ), সমাজসেবক রাইর সরাজ ঠাকুর, সাংবাদিক নির্মল সেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, ক্রিকেটার এ. এস. এম রকিবুল হাসান, সাবেক মন্ত্রী শেখ শহিদুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশিদ, এ্যাডভোকেট খোন্দকার মাহবুবউদ্দিন আহমেদ, সাবেক মন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) মহব্বতজান চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী খান আবু মিয়া, শহীদ আব্দুল লতিফ, শহীদ মাহাবুব, শহীদ অধ্যাপক সন্তোষ হালদার, সেন্ট মথুরনাথ বসু, কৃষ্ণনাথ সার্বভৌম, রমেশ সেন, চন্দ্র নাথ বোস, অধ্যাপক নরেন বিশ্বাস, সাহিত্যিক খালেক বিন জয়েনউদ্দিন, কৃতি ফুটবলার আবদুস সামাদ। কৃতি ফুটবলার সোহরাব হোসেন। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক মো. ইলিয়াস হোসেন ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী অনিল কুমার বিশ্বাস।

এক নজরে গোপালগঞ্জ

১. ভৌগোলিক অবস্থানঃ প্রায় ২২০৫১' থেকে ২৩০৫০' উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৯০০' থেকে ৯০০১০' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ

২. আয়তনঃ ১৪৮৯.৯২ বর্গ কিঃমিঃ

৩. মোট জনসংখ্যাঃ ১১,৭২,৪১৫ জন (২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে) পুরুষঃ ৫,৭৭,৮৬৮ জন মহিলাঃ ৫,৯৪,৫৪৭ জন

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলাঃ ৩,৪৪,০০৮ জন

মুকসুদপুর উপজেলাঃ ২,৮৯,৪০৬ জন

কাশিয়ানী উপজেলাঃ ২,০৭,৬১৫ জন

কোটালীপাড়া উপজেলাঃ ২,৩০,৪৯৩ জন

টুঙ্গিপাড়া উপজেলাঃ ১,০০,৮৯৩ জন

৪. জনসংখ্যার ঘনত্বঃ ৭৮৭ জন প্রতি বর্গকিলোমিটারে (২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে)

৫. উল্লেখযোগ্য পেশাঃ কৃষিজীবী, মৎস্যজীবী, চাকুরীজীবী, শিক্ষকতা, আইনজীবী, ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবী ।

৬. সংসদীয় আসন সংখ্যাসমূহঃ ০৩টি, ২১৫ গোপালগঞ্জ-১ (মুকসুদপুর- কাশিয়ানী (সিংগা, হাতিয়াড়া, পুইসুর, বেথুড়ী, নিজামকান্দি, ওড়াকান্দি, ফুকরা ইউনিয়ন সমূহ ব্যতীত)), ২১৬ গোপালগঞ্জ-২ (গোপালগঞ্জ সদর- কাশিয়ানী (সিংগা, হাতিয়াড়া, পুইসুর, বেথুড়ী, নিজামকান্দি, ওড়াকান্দি, ফুকরা ইউনিয়ন সমূহ)), ২১৭ গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া)

৭. প্রশাসনিক বিভাজনঃ

ক) উপজেলাঃ ০৫টি। (১) গোপালগঞ্জ সদর (২) মুকসুদপুর (৩) কাশিয়ানী (৪) কোটালীপাড়া (৫) টুঙ্গিপাড়া

খ) মোট পৌরসভাঃ ০৪টি। (১) গোপালগঞ্জ (২) কোটালীপাড়া (৩) টুঙ্গিপাড়া (৪) মুকসুদপুর

গ) মোট ইউনিয়ন পরিষদঃ ৬৮টি

ঘ) মোট গ্রামঃ ৯০৫টি

ঙ) মৌজাঃ ৬৫৩টি

৮. পোস্টাল কোড

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলাঃ ৮১০০
কোটালীপাড়া উপজেলাঃ ৮১১০
টুঙ্গিপাড়া উপজেলাঃ ৮১২০
কাশিয়ানী উপজেলাঃ ৮১৩০
মুকসুদপুর উপজেলাঃ ৮১৪০

৯. এন ডব্লিউ ডি কোড - ০২

১০. মোট জমির পরিমাণঃ ৩৬৭১৬০.৫৬ একর

১১. আবাদী জমির পরিমাণঃ ২৭৪০৪৮.৯৭ একর

১২. মাথাপিছু আবাদি জমির পরিমাণঃ ০.২২ একর

১৩. এক ফসলি জমিঃ ৯৭৬১৬.৮৭ একর

১৪. দুই ফসলি জমিঃ ১৩৪৮৬৬.৯৪ একর

১৫. তিন ফসলি জমিঃ ৩৭০৩৭.৬৫ একর

১৬. ফসলের নিবিড়তাঃ ১৭৬%

১৭. উল্লেখযোগ্য ফলঃ আম, কাঁঠাল, কলা, তাল ইত্যাদি।

১৮. হাট বাজারঃ ৮৯টি

১৯. লঞ্চ/ট্রলার ঘাটঃ ১২টি

২০. প্রধান ফসলঃ ধান, পাট, তৈলবীজ, ডাল ও গম ।

২১. মৎস্য সম্পদঃ কৈ, শিং, মাগুর, চাপিলা, কাঁচকি, রুই, কাতলা, গনিয়া, কালিবাউশ, নানদিনা, রায়েক, ঘেসোবাটা, পুটি, মলা, চেলা, বাঁশপাতা, আইর, টেংরা, বজুরী, রিটা, রোল, ঘাউরা, কাজলি, বাচা, সিলেন্দা, খলসা, কেচিখলসা, তপসে, শোল, গজার, টেপাও বাইন মাছ।

২২. উল্লে­খযোগ্য নদ-নদীসমূহঃ মধুমতি, বাঘিয়ার, ঘাঘর, পুরাতন কুমার, বিলরুট ক্যানেল, কালিগঙ্গা, টঙ্গীখাল, দিগনার, বাগদা, কুশিয়ারা, মধুপুর, শৈলদহ, ছন্দা।

২৩. বাওড়/বিলঃ বর্ণি বাওড় (টুঙ্গিপাড়া ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার আংশিক জুড়ে অবস্থিত), বাঘিয়ার বিল, চান্দার বিল।

২৪. মৎস্য খামারঃ ১০ টি সরকারি, ২টি বেসরকারি, মোট ১২টি

২৫. পোলট্রি ফার্মঃ ১৬৫টি সরকারি, ১টি বেসরকারি, মোট ১৬৬টি

২৬. প্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ সরকারি ৫১৮টি, রেজিঃ ২৪৭টি, মোট ৭৬৫টি

২৭. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ঃ সরকারি ০৪টি, বেসরকারি ১৫৩টি, মোট ১৫৭টি

২৮. মাদ্রাসাঃ ৪২টি (এবতেদায়ী ও দাখিল ২১টি, আলীম ১২টি, ফাযিল ০৭টি এবং কামিল ০২টি)

২৯. মহাবিদ্যালয়ঃ সরকারি ০৫টি, বেসরকারি ১৬টি, মোট ২১টি

৩০. বিশ্ববিদ্যালয়ঃ ০১টি (সরকারি) ।

৩১. মেডিকেল কলেজঃ ০১ টি (সরকারি)

৩২. অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ ৩২টি

৩৩. এতিমখানাঃ সরকারি ০২টি, বেসরকারি ১০৪টি, মোট ১০৬টি

৩৪. স্বাক্ষরতার হারঃ ৫৮.১% ( ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী)

৩৫. হাসপাতালঃ ০৮টি (সরকারি ০৬টি, বেসরকারি ০২টি)

৩৬. জেলখানাঃ ০১টি ক) প্রতিষ্ঠাকালঃ ২০১০, খ) বন্দী ধারণক্ষমতাঃ ৪৫০

৩৭. উল্লেখযোগ্য এনজিওঃ ব্র্যাক, সিডা, কেয়ার, প্রশিকা, আশা, কারিতাস, সিসিডিবি, মাদারীপুর লিগাল এইড, এসজিএস।

৩৮. বাৎসরিক গড় তাপমাত্রা: ২৫.৫০C

৩৯. বাৎসরিক বৃষ্টিপাত: ১৮৮৫ মিলি মিটার।

৪০. সমূদ্র পৃষ্ঠ হতে গোপালগঞ্জ জেলার উচ্চতাঃ তুলনামুলক ভাবে উচু অংশ ২৫ থেকে ৩০ ফুট এবং নিচু অংশ ১৪ থেকে ১৬ ফুট উচ্চে অবস্থিত ।

৪১. উল্লে­খযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানঃ

১. বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমী কোটালীপাড়া
২. শেখ জামাল যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, টুংগীপাড়া
৩. শেখ রাসেল দুঃস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, টুংগীপাড়া
৪. ১০০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎ কেন্দ্র ,গোপালগঞ্জ সদর
৫. ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, গোপালগঞ্জ সদর
৬. প্রাইমারী শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট, গোপালগঞ্জ সদর
৭. বাংলাদেশ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গোপালগঞ্জ সদর
৮. নাসিং ইনষ্টিটিউট, গোপালগঞ্জ সদর
৯. এসেনসিয়াল ড্রাগ সেন্টার, গোপালগঞ্জ সদর
১০. শেখ কামাল স্টেডিয়াম, গোপালগঞ্জ সদর
১১. মহিলা ক্রীড়া কমপেলক্স, গোপালগঞ্জ সদর
১২. সুইমিং পুল ও জিমন্যাসিয়াম, গোপালগঞ্জ সদর

৪২. দর্শনীয় স্থানঃ

১. জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সমাধি সৌধ কমপেলক্স টুঙ্গিপাড়া।
২. কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়ী (০৮ এপ্রিল হিন্দুসম্প্রদায়ের বার্ষিক বৃহত্তম জমায়েত হয়) ।
৩. কোটালীপাড়া উপজেলার ঊনশিয়া গ্রামে কবি সুকান্তের পৈতৃক ভিটা।
৪. গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ' জয় বাংলা পুকুর ' ৭১ এর বধ্যভূমি।
৬. টুঙ্গিপাড়া উপজেলাধীন বর্ণি বাওড়
৭. টুঙ্গিপাড়াস্থ বাগানবাড়ী (পাখির অভয়ারণ্য)।
৮. কোটালীপাড়া উপজেলাধীন হিরণ ইউনিয়নের বর্ষাপাড়ার লাল শাপলার বিল।

৪৩. সার্কিট-হাউজ/ডাকবাংলোর সংখ্যাঃ

(১) সার্কিট হাউজ ১টি, (২) ডাকবাংলো ৫টি, (৩) রেস্টহাউজ ৩টি।

Map of Gopalganj

Updates from Gopalganj

Reviews of Gopalganj

   Loading comments-box...