রাজধানী ঢাকার পূর্ব সীমানায় শীতলক্ষ্যার নদীর তীরে গড়ে উঠা জনপদ নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলা। ভৌগোলিক ভাবে এ উপজেলার উত্তরে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলা, পশ্চিমে রাজধানী ঢাকার ডেমরা, সবুজবাগ ও গুলশান থানা, দক্ষিণে সোনারগাঁ ও পূর্বে আড়াইহাজার ও সোনারগাঁ উপজেলা। আয়তন প্রায় ১৭৬ বর্গকিলোমিটার বা ৬৮.০২ বর্গমাইল। বরপা এই উপজেলাধীন তারাব পৌরসভায় অবস্থিত।
তারাব পৌরসভা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ১৮কিঃ মিঃ পূর্বে নারায়নগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে অবস্থিত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাচঁপুর ব্রীজ সংলগ্ন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক তারাব পৌরসভার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। এই পৌরসভাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে চলে গেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। যার দু'পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান। রূপগঞ্জের অর্থনৈতিক প্রানকেন্দ্র ও অতীত ঐতিহ্য মন্ডিত এই তারাব পৌরসভা। এ পৌরসভার আয়তন ২৪.৬০ বর্গ কি.মি., ওয়ার্ড সংখ্যা ৯, মৌজা সংখ্যা ২০ এবং জনসংখ্যা ১,৫০,৭০৯জন (২০১১ আদমশুমারীঅনুযায়ী)। যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০২ সালে ”গ” শ্রেণীর পৌরসভা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভের পর পর্যায়ক্রমে গত ০৩/০৬/২০১৩ ইং সালে ”ক” শ্রেণীর পৌরসভায় উত্তীর্ণ হয় ।
এই পৌরসভা একটি শিল্প সমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিত। দেশের খ্যাতিনামা শিল্প-প্রতিষ্ঠান এই পৌরসভায় অবস্থিত। ঢাকার উপকন্ঠে তারাব পৌরসভা একটি উপশহর হিসেবে গড়ে উঠায় পৌরসভাটি আবাসিক ও শিল্প ক্ষেত্রে মানুষের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে ।
ঐতিহ্যবাহী জামদানী শাড়ী প্রস্তুতের শিল্প নগরী হিসেবে তারাব পৌরসভা সুপরিচিত। মোঘল আমল হতে বর্তমান পর্যন্ত জামদানী শাড়ী দেশে-বিদেশে জনপ্রিয়। জামদানী পল্লীর অবস্থান তারাব পৌরসভাতে যেখান হতে এই বিখ্যাত জামদানী শাড়ী প্রস্তুত করা হয় ।
তারাব পৌরসভা ১জন মেয়র যিনি নির্বাচিত প্রতিনিধি, ৯টি ওয়ার্ডে ৯জন পুরুষ কাউন্সিলর এবং প্রতি ৩টি ওয়ার্ডের জন্য ১জন করে মোট ৩জন মহিলা কাউন্সিলর নিয়ে পৌর পরিষদ গঠিত। তারাব পৌরসভার ২০টি মৌজার মধ্যে বরপা উল্লেখযোগ্য।
তারাব পৌরসভার মৌজাসমুহঃ
(০১) দেবই (০২) নোয়াগাঁও (০৩) গর্ন্ধবপুর (০৪) চর গর্ন্ধবপুর (০৫) উত্তর রূপসী (০৬) তারাব (০৭) দক্ষিন রূপসী (০৮) যাত্রামুড়া (০৯) টাট্কী (১০) দীঘি বরাব (১১) খাদুন (১২) মৈকুলী (১৩) সুতালড়া (১৪) বরপা (১৫) আড়িয়াব (১৬) কর্ণগোপ (১৭) তেতলা (১৮) মাসাব (১৯) ঐরাব (২০) নোয়াপাড়া
যোগাযোগ ব্যবস্থা
ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ এর সাথে এই পৌরসভার যোগাযোগ সড়ক ও নৌপথে। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর কাঁচপুর ব্রীজ ও কাঞ্চন ব্রীজ রূপগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি এলাকার সাথে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার যোগাযোগের পথ সুগম করেছে।
ডেমরা- তারাব ব্রীজের নির্মিত হওয়ায় জেলা সদরসহ রাজধানীর সাথে যোগাযোগ সহজ হয়েছে। পন্য সামগ্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে নদীপথ সর্বোত্তম বিধায় শীতলক্ষ্যা নদীর দুকূলে গড়ে উঠেছে কয়েকশত শিল্প প্রতিষ্ঠান।